Uniting for Resilience: A Royal Witness to Climate Adaptation and Empowerment in Bangladesh
বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের সবুজ রূপান্তর শীর্ষক সংলাপে হাজির হলেন সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া
March 21, 2024
ঢাকা: ২১ মার্চ, ২০২৪: সুইডেনের রাজকন্যা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র শুভেচ্ছাদূত ভিক্টোরিয়া ২১ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের সবুজ রূপান্তর শীর্ষক সংলাপে যোগ দেন। ইউএনডিপি এবং সুইডেন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত "বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রুপান্তর ত্বরান্বিত করা : টেকসই আগামীর জন্য সরকারি-বেসরকারি-উন্নয়ন সহযোগিতা" শীর্ষক সংলাপে সরকারি, বেসরকারি এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রধান অংশীদারগণ উপস্থিত ছিলেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজি অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এ সংলাপটি আয়োজন করা হয়।
টেকসই উন্নয়নকে বলবত রাখার যৌথ প্রয়াস হিসেবে, এই সংলাপে সরকারি, বেসরকারি এবং উন্নয়ন সংস্থার মূল অংশীজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জলবায়ু মোকাবেলার কর্মকান্ডের বিষয়ে সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়ার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দুনিয়াব্যাপী সমাদৃত। তিনি গত বছরের অক্টোবরে এসডিজি’র পক্ষে বৈশ্বিক জনমত তৈরির উদ্দেশ্যে ইউএনডিপি’র শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করে আসছেন। আজকের সংলাপে সুইডিশ রাজকন্যার এই উপস্থিতি পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার গুরুত্বকেই আরো জোরদার করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে, ‘পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা মাসরুর রিয়াজ বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তরে বেসরকারি খাতের ভূমিকার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। পরে, ইউল্যাব-এর উপাচার্জ অধ্যাপক ইমরান রহমান এর মডারেশনে একটি প্যানেল আলোচনায় সরকারি-বেসরকারি-উন্নয়ন সংস্থার যৌথ সহযোগিতিার বিষয়ে আলোচনা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক সুইডিশ মন্ত্রী ইয়োহান ফরশেল, জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিব এবং ইউএনডিপি’র এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মদির এবং ‘এসবিকে টেক ভেঞ্চারস’-এর প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির সহ অন্যান্য প্যানেলিস্টরা জ্বালানিখাতে সবুজ রূপান্তরের জন্য চালিকা শক্তি, চ্যালেঞ্জ এবং কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
সালমান এফ. রহমান বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা রয়েছে, আর এতেই স্পষ্ট হয় আমাদের বিনিয়োগে টেকসই পরিবেশ এবং নিরাপত্তাকে কতোখানি গুরুত্ব দেওয়া হয়। দু:খজনক যে, এই বিনিয়োগের উল্টো দিকে পণ্যের দাম কিন্তু একই হারে বৃদ্ধি করা সম্ভব হয় না। যদিও পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই পণ্য কেনার প্রতি তরুণদের ভেতর আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু সাধারণত এর জন্য বাড়তি মূল্যটা পরিশোধ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে না। অতএব, যদি আমরা টেকসই পণ্য চাই, আমাদের অবশ্যই উৎপাদকদেরকে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে এবং ক্রেতারাও বাড়তি মূল্য পরিশোধের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে।”
সুইডিশ মন্ত্রী ইয়োহান ফরশেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, "এখানে প্রচুর পরিমাণে বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে এবং আমরা যদি এর কিছু শতাংশ দারিদ্র্যদূরিকরণে ব্যয় করতে পারি তবে এটি একটি বিশাল প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে। বাংলাদেশে আমাদের ৫০টিরও বেশি সুইডিশ কোম্পানি কাজ করছে। আমি মনে করি এটা বেশ ভালো একটা খবর কিন্তু আমাদের সামনে আরো ভাল কিছু করার সম্ভাবনা আছে। আমি আশা করবো আরো অনেক সুইডিশ কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। এবং বাংলাদেশী কোম্পানিগুলোও সুইডেন ও ইউরোপে বিনিয়োগ করবে এবং এই অংশীদারিত্বকে আরো মজবুত যায়গায় নিয়ে যাবে।"
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উলরিকা মোদির বলেন, “আমরা জানি, উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সত্যিই অসাধারণ। তাছাড়া, বাংলাদেশকে এমন কিছু সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে যার জন্য আদতে তার নিজের জনগণ দায়ি নয়। আর এধরনের সমস্যা মোকাবেলা প্রয়োজন পারস্পরিক সংহতি, কারণ কিছু সমস্যা আমাদেরকে সবাইকে একসাথে সমাধান করতে হবে। তাই, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্য উভয়ের জন্য আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সমাধানে পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। মনে রাখা জরুরি আমাদেরকে একে অন্যের কথা শুনতে হবে, নিজ নিজ আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করতে হবে এবং সবাই নিজ নিজ অঙ্গীকারকে কার্যকর করতে হবে।"
বেসরকারি খাতের দায়িত্ব সম্পর্কে সোনিয়া বশির কবির বলেন, "বাংলাদেশে বেসরকারি খাতকে উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তা অবশ্যই নীতিমালা মেনে। প্রেসিডেন্ট কেনেডির বিখ্যাত উক্তি ধার করে বলতে চাই, "আপনার দেশ আপনার জন্য কী করতে পারে তা জিজ্ঞাসা করবেন না। আপনি, আপনার দেশের প্রতি আপনি কী করছেন তা নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। তাই অন্যান্যদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আমাদের বেসরকারি খাতকেই দায়িত্ব নিতে হবে।”
অন্যান্যদের মধ্যে, সরকার ও উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিদের সাথে এইচএন্ডএম, গ্রামীণফোন, এরিকসন, ম্যারিকো, ইউনিলিভার, ভলভো, অ্যাটলাস কপকো এবং স্ক্যানিয়ার মতো বিভিন্ন বেসরকারি খাতের কোম্পানির প্রতিনিদিগণ উপস্থিত ছিলেন।